এই ব্লগটি সন্ধান করুন

শুক্রবার, ২৭ মার্চ, ২০১৫


প্রযুক্তির অপব্যবহার

এই যুগ প্রযুক্তির-নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। যদি প্রশ্ন করা হয় প্রযুক্তি ছাড়া আমাদের কি একদিনও চলবে খুব জোড়ালো কন্ঠেই উত্তর আসবে না। যেই প্রযুক্তি আমাদের জীবন যাত্রাকে এতটা সহজ করেছে সেই প্রযু্ক্তিগুলোর কিছু কিছু অংশ  আজ আমাদের জন্য কাল হয়ে দাড়িয়েছে। প্রযুক্তির সুফল যেখানে আমাদেরকে বিশ্বদরবারে একটি উন্নত জাতি হিসেবে দাড় করাবে কিন্তু ঘটতে যাচ্ছে তার বিপরীত। আর তার জন্য দায়ী আমরা নিজেরাই। কথায় আছে কপালের সিদুর যদি পায়ে মোছে  তাহলে কার কি আসে যায়। সত্যিই কথাটার যর্থাথতা রয়েছে, যার প্রমান মিলবে অল্পক্ষনেই।

সেলফোন : একে অপরের সাথে যোগাযোগ রক্ষায় সেলফোনের ভুমিকা অপরিসীম। তারওয়ালা ল্যান্ড ফোনগুলোর নানা ঝামেলা এড়াতে আমাদের দেশে প্রচলন হয় তার বিহীন সেলফোনের। প্রথমদিককার সেলফোনগুলোর মাধ্যমে শুধু কথা বলা ও ম্যাসেজ লিখা যেতো। ছিলো না কোনো ক্যামেরার ব্যবস্থা। কিছু দিন যেতে না যেতেই প্রযুক্তিবিদদের অক্লান্ত প্ররিশ্রমে এতে যোগ হলো ক্যামেরা , এমপিথ্রি প্লেয়ার ও এমপি ফোর প্লেয়ার। কিন্তু প্রযুক্তির আর্শীবাদ এই সেলফোনগুলো কতিপয় ব্যবহারকারীর কারনে প্রযুক্তির এক কালো অধ্যায় রচনা করছে। সেলফোন অপারেটরদের নানা সুবিধা ভোগ করতে আজ আমরা রাত ভোর করে দিচ্ছি কথা বলতে বলতে। যার প্রভাব পড়ছে আমাদের কর্মস্থলে। পাশাপাশি শারিরিক ও মানসিকতো রয়েছেই। স্কুল পড়–য়া ছাত্র-ছাত্রীরাও আজ সেলফোন নেশায় মেতে উঠেছে। তারা বিদ্যালয়ে সেলফোন নিয়ে যাচ্ছে। আর  তাতে লোড থাকছে নানা পর্ণোগ্রাফি যা নিজে দেখছে এমনকি বন্ধুদের নিয়ে ও শেয়ার করছে। যদি বারন করা হয় তাহলে শোনাচ্ছে নানান যুক্তি।

সেলফোন রেডিয়েশনঃ যুক্তরাষ্ট্রের এক গবেষনায় প্রমানিত সেলফোন থেকে যে ধরনের রেডিয়েশন নির্গত হয় তাতে নার্ভ ক্ষতিগ্রস্থ , চোখে ক্যাটরেখ, রক্তের উপাদানগত পরিবর্তন, দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া ইত্যাদি ঘটে থাকে। জাপানে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে মুত্যু ঘটেছে এমন লোকের সংখ্যাও সম্প্রতি কম নয়। সম্প্রতি আমাদের দেশের সেলফোন ব্যবহারকারীরাও হাসপাতালের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলছেন। এটি প্রযুক্তির কুফল ছাড়া আর কিছুই নয়।

বিল্ট ইন ক্যামেরা : এবার আসা যাক সেলফোন বিল্ট ইন ক্যামেরার কথায়। সেলফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো একে অপরের সাথে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়ে নানান রেজ্যুলেশনের ক্যামেরা সংবলিত সেলফোন বাজারে ছাড়ছে। ব্যবহারকারী তার পছন্দনুযায়ী সেলফোনটি ক্যামেরা হিসেবে ব্যববহারের জন্যই উচুঁদরে কিনে নিয়ে যাচ্ছে। হয়তবা সেই ব্যবহারকারী ক্যমেরাটির যর্থার্থ ব্যবহার করছেন। কিন্তু আরেক ব্যবহারকারী ঘটাচ্ছে তার উল্টোটি। আর এসব ঘটনাগুলো যারা ঘটাচ্ছেন তাদের অধিকাংশই উঠতি যুবক বা যুবতী। যাদের পাড়ার মোড়গুলোতে স্কুল কলেজ ছুটি হবার সময় চুটিয়ে আড্ডা মারতে দেখা যায়। দেখা গেলো(হরহামেশাই ঘটছে) কোনো স্কুল বা কলেজ পড়–য়া ছাত্রী তার সামনে দিয়ে হেটেঁ যাচ্ছে ঠিক তখনি সেই সেলফোনওয়ালা তার একটি ছবি তুলে বসলেন। এতে সেই ছাত্রীটি একটি অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছে। আবার এর বাধাঁ দিতে গেলেও হয়তো মান ইজ্জত খুইয়ে বসছেন। এমনও হতে পারে সেই যুবকটি সদ্য তোলা এই ছবিটি ইন্টারনেটে নানান বিকৃতি করে ছেড়ে দিচ্ছে এবং সবাইকে জানান দিচ্ছে। কারন দুস্কর্মের জন্য কম্পিউটার জানা পন্ডিতের অভাব হয় না। এভাবে অপ্রীতিকর ঘটনার সম্মুখীন হতে হতে  একদিন পত্রিকার পাতায় বড় অক্ষরেই ছাপা হচ্ছে বখাটের উৎপাতে কোনো ফাতেমা বা জুলেখার আত্তাহুতি।

ল্যাপটপ বিল্ট ইন ক্যামেরা : এখনকার ল্যাপটপ কম্পিউটারগুলোতে বিল্ট ইন ক্যামেরা রয়েছে। যা প্রযুক্তির এক নতুন রপরেখা। এই ক্যামেরাগুলো ল্যাপটপ বন্ধ থাকা অবস্থায়ও ছবি তুলতে বা ভিডিও করতে সক্ষম। ফলে খারাপ লোকের মনবাসনা পুরনে এটি এক সহায়ক ভুমিকা পালন করে।

পেনড্রাইভ : প্রথমে কম্পিউটারের সাথে রিমোভেবল ডিস্ক হিসেবে প্রচলন ছিলো ফ্লপি ডিস্কের। ডেটা লস হবার কারনে এই ডিভাইসটি ততটা বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে পারে নি। ফলে কম্পিউটার প্রযুক্তিবিদদের ঘুম হারাম হয়ে যায়। লক্ষ্য একটাই কিভাবে ডেটা অক্ষুন্ন অবস্থায় এক কম্পিউটার থেকে আরেক কম্পিউটারে আদান প্রদান করা যায়। অবশেষে এর সমাধান হিসেবে আবিস্কার হলো পেন ড্রাইভের । আজকাল বাজারে (১২৮, ৫১২ মেগাবাইট, ১,২,৪,৬,৮ গিগাবাইট) পর্যন্তও পেন ড্রাইভ পাওয়া যায়। তাই আজ আমরা খুবই বিশস্ততার সহিত ডেটা আদান প্রদান করছি। কিন্তু এর কিছুটা কুফলও রয়েছে। উদাহরন হিসেবে বলতে হয়, পেনড্রাইভ রয়েছে এমনি একজন তার যে কোনো বন্ধুর কম্পিউটার থেকে নিষিদ্ধ র্ভিডিও চিত্র বা স্থির চিত্র খুব সহজেই পেনড্রাইভে করে বয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এমনকি সাইবার ক্যাফেতে বসেও নিষিদ্ধ ওয়েবসাইটগুলো ঘেটেঁ তার বিভিন্ন কনটেন্ট পেন ড্রাইভে বয়ে নিয়ে যাচ্ছে

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন